আজ রবিবার, ১৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

চুরির অভিযোগে দুই যুবককে গাছে বেঁধে নির্যাতন

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে ভ্যান চুরির অভিযোগে দুই যুবককে গাছে বেঁধে নির্যাতন করা হয়েছে। উপজেলার বিশনন্দী ইউনিয়নের রামচন্দ্রী এলাকায় মঙ্গলবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। রাত ৮ টার দিকে ওই দুই যুবককের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে আড়াইহাজার থানায়।

দুই যুবককে গাছের সাথে বেঁধে পেটানোর ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। ভিডিওতে দেখা গেছে, সাদা রশি দিয়ে গাছের সাথে বেঁধে লাঠি দিয়ে পেটানোসহ মারধর করা হচ্ছে তাদের। পরে নির্যাতনের শিকার এক যুবক মোবাইলে কথা বলছেন আর কাদঁছেন।

তিনি বলছেন, ‘আফা এক জনের লগো এই খানে কামো আইছিলাম। কামো আইছি বাধে এই খানে একটা ভ্যান গাড়ি পাইয়া ওয় কইতাছে আয় ভ্যানগাড়ি নেই গা। আমি কইছি না নিতাম না। আমি যাইতাছিগা হাইট্টা। হে ভ্যান গাড়ি লইয়া যাইতাছে। তখন মানুষে ধইরা আমার হাত পা ভাইঙ্গা আলছে। আফা আমার হাত পা ভাইঙ্গা আলছে। ভিডিওর একটি অংশে দেখা দেখে দুই যুবক কে রশি দিয়ে বেঁধে রাস্তা দিয়ে পায়ে হেঁটে নিয়া যাওয়া হচ্ছে।

এ ঘটনায় আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আজিজুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে সেখান থেকে দুই যুবককে থানায় নিয়ে আসে। পরে তাদের বিরুদ্ধে ভ্যান চালক মনির ভূইয়া বাদী হয়ে মামলা করেছেন।

ওই দুই যুবক হলেন, কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার জামাইল গ্রামের মোঃ নাছির (১৯), ও শরিয়তপুর,শখিপুর উপজেলার কদমতলী গ্রামের মোস্তফার ছেলে মো. বিল্লাল হোসেন (২৮)। তারা দু’জনই নরসিংদী মাধবদীতে ভাড়া থাকেন। পেশায় রাজমিস্ত্রি।

মামলায় বলা হয়, দুপুর ১২ টার দিকে তার বাড়ির পাশে মামা-ভাগিনা সাইজিং মিলের পাশে তার পুরাতন ভ্যানটি তিনি বাড়ীতে যান। আধাঘন্টা পর বাড়ী থেকে সাইজিং মিলের সামনে গিয়ে দেখেন ভ্যানটি নেই। এরপর তিনিসহ আরও কয়েকজন ভ্যানটি খোঁজাখুজি শুরু করেন। কিছুদূর সামনে গিয়ে দেখেন অজ্ঞাতনামা দুইজন তার ভ্যান গাড়ীটি নিয়ে যাচ্ছে তখন মামলার বাদীসহ আরও কয়েকজন ওই দুই যুবককে হাতেনাতে আটক করে ভ্যান গাড়াটি উদ্ধার করে। পরে ভ্যানগাড়ী সহ রামচন্দ্রী এলাকায় গিয়ে আড়াইহাজার থানা পুলিশকে সংবাদ দিলে পুলিশ গিয়ে তাদের থানায় নিয়ে আসে। তবে মামলার কোথাও দুই যুবককে নির্যাতন করার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়নি।

এ বিষয়ে জানতে মামলায় বাদী মনির ভূইয়ার মুঠোফোনে কল করা হয়। ফোন রিসিভ করে একজন বলেন তিনি মনিরের ছোট ভাই। মনির ফোন চালান না। ঘটনার বিষয়ে চানতে চাইলে তিনি বলেন, ওই দুইজনকে পিটিয়েছে গ্রামবাসী। আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না।

ছেলেকে নির্যাতনের খবর পেয়ে মো নাছিরের মা নাছিরের মা আয়শা বেগম নরসিংদীতে মাধবদী থেকে ছুটে আসে আড়াইহাজার থানায়। তিনি বলেন, আমার ছেলেরে কামের কথা বইল্লা ঘর থ্যাইকা ডাইকা নিয়া আসছে বিল্লাল। বিকেলে ফোনে জানতে পারলাম ওরে মারতাছে। পরে এখানে আইসা দেখি পুলিশে থানায় নিয়া আসছে। থানায় আইসা দেখি আমার পোলার চুল কাইট্টা কাটছে। অনেক মারছে।

আড়াইহাজার থানার ওসি জানান, তাদের রশি দিয়ে বেঁধেছে স্থানীয় জনসাধারণ। পুলিশ গিয়ে তাদের থানায় এনেছে। যদি ওই দুই যুবককের পরিবার কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন তাহলে আমরা তাদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা নিবো।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ